রক্ত পরিষ্কার করে- সামান্য কাজে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন, নিজেকে দুর্বল লাগছে? একটু ঘুমালে আরাম পাবেন ভেবে বিছানায় গেলেই, চোখ থেকে ঘুম হাওয়া হয়ে যাচ্ছে। দু’একদিন নয় এ ঘটনা আপনার সঙ্গে ঘটছে প্রায় প্রতিদিন। আমাদের শরীরে এমনটা হয় শুধু মাত্র আয়রনের অভাবে। আর শরীরের আয়রনের ঘাটতি শুধুমাত্র পূরণ করতে পারে আখ, খেজুর বার তালের গুড়। গুড়ের সঙ্গে আদা গুড়া বা ছোলা মিশিয়ে খেলে আয়রনের পরিমাণ বেড়ে যায় আরও কয়েকগুণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গুড়ে প্রচুর পরিমাণ আয়রন পাওয়া যায় যা শরীরে হিমোগ্লবিনের মাত্রা বাড়ায়। এই ঘুরে শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন ছড়িয়ে দেয়।
নারীদের মধ্যে বেশী মাত্রায় আয়রনের অভাব দেখা যায়, বিশেষ করে ঋতুস্রাবের সময়। এসময় তাদের দুর্বল ও ক্লান্ত দেখায়। এ অবস্থায় তাদের ঘাটতি পূরণ করতে আয়রনের বিকল্প নেই। গুড়ে সুক্রোজ, আমিষ, চর্বি, ক্যালসিয়াম, ফসফেট, ক্যারোটিন, রাইবোফ্ল্যাবিন ও নিয়াসিন থাকে। গুড় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, কোষ্ঠকাঠিন্য ও লিভার ভালো রাখে। বিশেষজ্ঞরা আয়রনের ঘাটতি পূরণে দুইটি মিশ্রণ তৈরির প্রস্তুত প্রণালী দিয়েছেন, নিম্নে তা আলোচনা করা হল:
গুড় ও ছোলা : রাতে এক মুষ্টি ছোলা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন পানি ঝড়িয়ে ছোলায় দুই চা চামুচ গুড় মিশিয়ে নিন। ভোরে খালি পেটে এই মিশ্রণটি খেয়ে নিন। এতে আপনার ক্লান্তি ও অনিদ্রা দূর হবে ও আয়রনে ঘাটতি পূরণ হবে।
গুড় ও শুকনা আদা গুঁড়া : দুই চা চামুচ গুড়, এক চা চামুচ আদা গুঁড়া ও এক চিমটি মরিচ গুঁড়া এক সঙ্গে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। দিনে তিনবার এক চা-চামুচ করে এ মিশ্রণটি খান উপকার পাবেন। এছাড়া গুড়ে আর কী কী রোগ সারানোর ক্ষমতা রয়েছে, তা নিম্নে আলোচনা করা হল :-
কোষ্ঠকাঠিন্য : গুড় হজমশক্তি বাড়ায়। সেই সঙ্গে এর ভিতরের শর্করা কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর করে। এ জন্য রোজ এক চামচ গুড়ই যথেষ্ট।
লিভার ভাল রাখে : গুড় লিভার থেকে যাবতীয় টক্সিন দূর করে। শরীরের টক্সিন বের করতে রোজ ছোট্ট এক টুকরো গুড় আপনাকে সাহায্য করবে।
সর্দি-কাশিতে : গুড় সর্দি-কাশিও তাড়ায়। সর্দি হলে প্রতিদিন সকালে এক চামুচ গুড় খেয়ে দেখুন।
রক্ত পরিষ্কার রাখে : গুড় লিভার থেকে টক্সিন বের করে দেয়, সেই জন্য রক্তও পরিষ্কার করে।
স্টমাক ঠাণ্ডা রাখে : গুড় স্টমাক ঠাণ্ডা রাখে।
ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রক : গুড়ে সোডিয়াম আর পটাসিয়াম থাকে, যা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে।
শ্বাসকষ্ট কমায় : গুড় আপনার শ্বাসকষ্টে স্বস্তি দেবে। অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিসের মতো অসুখে রোজ গুড় খেলে উপকার পাওয়া যায়।
গাঁটের ব্যথা কমায় : গাঁটের ব্যথায় গুড় স্বস্তি এনে দেয়। এক গ্লাস দুধের সঙ্গে ১ টেবিল চামুচ গুড় মিশিয়ে খান উপকার পাবেন।
মেদ ঝরায় : গুড় শরীর থেকে টক্সিন বের করার পাশাপাশি মেদ গলাতেও সাহায্য করে।